পৃথিবীটাকে আমি পিয়ানোর মতো
৩
ভুলে গেছি কবিতা লিখতে, দূরে আছি কবিতার থেকে
কবিতা তোমার মত দূরবর্তী গ্রামের মেয়েটি।
কখনো মনে পড়লে হঠাৎ, আকাশের দিকে তাকাবো,
যত দূরেই থাকো আকাশ সেই পর্যন্ত পৌঁছবে।
নিশ্চিন্ত হও নিজেকে নতুন করে সাজাও রুক্ষতা
নিভে যাওয়া সেলাই মেশিনে নতুন কাপড় দিয়েছি
নরম চামড়ার নিচে আরো নরম রক্তের দৌড়
যখন তোমার কথা ভাবি এলোমেলো হয়েছে স্নিগ্ধতা
অতীত এসেছে বুকে, এনেছে চৌচির মুখ-
তুলির রেখার মতো স্পন্দনে, সীমারেখা টপকে এসেছে।
দ্বিতীয় শ্রেণীর ছায়া সোজাসুজি ঘরে ঢুকে যায়
ছুঁয়েছে নিবিড় কলোনি ,জিভ তার সরছেনা মুখে।
প্রতিটি ফুলের ছিল নিরপেক্ষ নিখুঁত শরীর
আঁকতে ক্লান্ত লাগে এত রং, ভাবি উপেক্ষা করবো
ওরাই আমাকে ডাকে ,উপলক্ষ দেয়
দিনের শুরুটা একটা ভাঙ্গা ফুলদানির মত সুন্দর
১৪
ছোটরা গ্ল্যামার করে না তাদের শিরদাঁড়ায় বসন্ত হোঁচট খাচ্ছে
তুমি ছাড়া তোমার থেকে আমার আর কিছু চাইনা।
রাতের নীরবতা কাম ব্যাক করছে যেন মাইক টাইসন উনিশশো নব্বই।
উঠে দাঁড়াও আর হাঁটো, যতক্ষণ না তোমার পা দুটো অবশ হয়ে যাচ্ছে পুরোপুরি।
আমি তো আকছার শুনি নক্ষত্র খসার শব্দ ,দোকানে সাটার নামছে ,
মেডিসিন শপের ছেলেটা সিগারেট ধরাচ্ছে ডিজেল লাইটার দিয়ে।
কুড়ি টাকার দশ টাকার নোট গুনছে সুমন,
অটো স্ট্যান্ডের কার্তিক।
পিছুটান শব্দটা যারা বুঝতে পারে না তাদেরও পিছুটান ছিল।
অনেক লাইটের রেস্তোরায় একদিন আমরা সাবলীল, রাস্তাগুলো হবে উদ্যানপন্থী, ঘাসের বাজারে আমরা হাসি কিনতে যাবো।
প্রেম বলো ,সারাক্ষণ মনে পড়া বলো ,বোকামি বলতে পারো,
নিশ্চয়ই অতীতে কখনো ডুবে যাওয়া জাহাজের খালাসী ছিলাম।
তুমি আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভেবে ফুরিয়ে যেও না,
হারানো কাপড় খুঁজে পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে প্রতিবেশী।
পালকে সোয়াবিন গন্ধ নিয়ে চড়াই উড়ছে টিলায় ,
ছোটরা গ্ল্যামার করে না ,তাদের শিরদাঁড়ায় বসন্ত হোঁচট খাচ্ছে।
আশীষ সাহা
জন্ম বরানগরে। পড়াশোনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাষাবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি বই “রিহ্যাবের ভাষা” , “হাওয়ায় লেখা কবিতা”, “ভালোবাসা বিয়োগশূণ্য”। অনুবাদ গ্রন্থ “ঘরের মধ্যে বৃষ্টি পড়ছে” (পল সেলিন)। প্রিয় ফুটবল দল বার্সেলোনা। প্রিয় শিল্পী হেনরি মাতিস।